ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার (ফটো ব্লগ- ৪)
বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৬৪ জন
নিহত হয়। আর এই সংখ্যা বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতদের সংখ্যার মধ্যে সর্বোচ্চ। সেন্টার ফর ইনজ্যুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) করা ২০১৭ সালের এই গবেষণা তথ্য থেকে আঁচ করা যায়, সড়কে মানুষ কতটা অনিরাপদ থাকে।
দেশের অন্যতম দুর্ঘটনাপ্রবণ মহাসড়ক ঢাকা-আরিচার কোল ঘেঁষেই অবস্থান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। অসচেতনতা, তাড়াহুড়া, কিংবা সড়কে অব্যবস্থাপনার কারণে হারহামেশাই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। মাঝেমধ্যে ঘটে যায় হতাহতের মতো ঘটনাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে
ওভারব্রিজ থাকলেও অনেকেই তা ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন। সড়ক বিভাজকে
ভাঙা থাকায় তা এই চলাচলকে আরো গতি দিয়েছে। ব্যস্ততম এই মহাসড়কটি এভাবে পার হতে
গিয়ে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
সাভার-ঢাকাগামী যাত্রীরা সময় বাঁচাতে এবং ওভারব্রিজে ওঠার কষ্ট
এড়াতে এভাবেই হেঁটে সড়ক পার হন। প্রধান ফটকের অদূরে যে গতিরোধক আছে তা বড়
গাড়ির গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকছেই।
প্রধান ফটক সংলগ্ন এই
যাত্রী ছাউনিটি দীর্ঘদিন ধরে অচল ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে বাসগুলো
যাত্রী ছাউনির সামনে থামেও না। ফলে গাড়ির জন্য মূল রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে
থাকে শিক্ষার্থীরা। তাই এটি ভেঙে উপযুক্ত স্থানে যাত্রী ছাউনি স্থাপন করা জরুরি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা গেটের ছাউনিটি ঝুঁকিপূর্ণ না
হলেও সবসময় নোংরা থাকে। পরিস্কার করা হয় না বিধায় যাত্রীরা ঢাকাগামী গাড়ির জন্য
মূল রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে নারী ও শিশু যাত্রীরা অসুবিধায় পরে বেশি।
২০১৭ সালের মে মাসে এই
মহাসড়কেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমে
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ফটকগুলোর সামনে স্পিড ব্রেকার ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন
এবং জয় বাংলা গেটে ওভার ব্রিজ স্থাপনের দাবি জানায়। পরবর্তী এক বছরে স্পিড ব্রেকার
হলেও প্রশাসনের দেওয়া আশ্বাস অনুযায়ী সিসি ক্যামেরা আর ওভারব্রিজের দাবি পূরণ
হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহুল ব্যবহৃত এই ফটক সংলগ্ন সড়কে স্পিড ব্রেকার না থাকায়
বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হন যাত্রীরা। এখানে ওভারব্রিজের দাবি দীর্ঘদিনের।
আর কত বছর গেলে একটা ওভারব্রিজ তৈরি হবে, সেই প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।
Comments
Post a Comment