বিজ্ঞান গবেষণায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (ফটো ব্লগ- ৩)


বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ, উদ্ভিদ এবং প্রাণী নিয়ে গবেষণায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে বেশ সুনাম। প্রতিটি বিভাগের গবেষণাগার ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে গবেষণার জন্য রয়েছে কয়েকটি স্থাপনা।


ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র: 



বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একাডেমিক বিজ্ঞান গবেষণাগার ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড.ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতি ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে তার নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে। ছয়তলা বিশিষ্ট এ গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালে। গবেষণাগারটি শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, সারা দেশের বিজ্ঞানমুখী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্যও বিজ্ঞান গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। 

পানি গবেষণা কেন্দ্র:

পানি দূষণ রোধ এবং ব্যবহৃত পানি পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করার লক্ষ্যে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়েছে পানি গবেষণা কেন্দ্র। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বব্যাংকের উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের (হেকেপ) অর্থায়নে এ গবেষণা কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়।

প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র:


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে প্রজাপতি। কিন্তু বৈরি প্রাকৃতিক পরিবেশে দিন দিন কমে যাচ্ছে তাদের সংখ্যা। হুমকির মুখে থাকা প্রজাপতি নিয়ে গবেষণা করে প্রজননের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাবিতে নির্মাণ করা হয়েছে প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে তিন একর জায়গার ওপরে এটি  তৈরি করা হয়েছে। 

মৎস গবেষণা কেন্দ্র:


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তত্ত্বাবধানে মাছ নিয়ে গবেষণার জন্য নির্মিত হয়েছে মৎস হ্যাচারী ও গবেষণা কেন্দ্র। জলজ প্রকৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মৎস সম্পদের প্রজনন এবং উৎপাদন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম চালিত হয় এখানে।

ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার:


বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্ব দক্ষিণে রয়েছে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার বা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র নামে একটি প্রাণী গবেষণাগার। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বন্যপ্রাণী শাখার অধীনে করা এ কেন্দ্রটি মূলত প্রাণী গবেষণা এবং অসুস্থ ও বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীদের নিয়ে কাজ করে। ২০০৬ সালে শ্রীমঙ্গলের চা বাগান থেকে আহত একটি অজগরকে উদ্ধার করে রেসকিউ সেন্টারে রেখে সেবা দিয়ে পুনরায় সেখানে অবমুক্ত করা হয়। এই কেন্দ্রের উদ্যোগেই ২০০১ সাল থেকে পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় পাখি মেলার। 

বোটানিক্যাল গার্ডেন:


উদ্ভিদ সংরক্ষণ এবং তাদের নিয়ে  গবেষণার লক্ষ্যে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধীনে বানানো হয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা ও গবেষণা কাজে এটিকে ব্যবহার করেন। এছাড়াও এই বোটানিক্যাল গার্ডেনের মধ্যে রয়েছে প্রজাপতি গার্ডেন, সাপ গবেষণা কেন্দ্র এবং একটি লেক, যেখানে শীতকালে অতিথি পাখিরা আসে। 

এসব স্থাপনা ছাড়াও বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্য দুটি বিজ্ঞান অনুষদের প্রতিটি বিভাগে রয়েছে আলাদা ল্যাবরেটরি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসব স্থান থেকে সুনামের সাথে গবেষণা কাজ করে যাচ্ছেন। 




Comments

Popular posts from this blog

গণমাধ্যমের রাজনৈতিক অর্থনীতি কী?

গণমাধ্যমের প্রচারণা মডেল ও ফিল্টার

সামাজিক স্তরবিন্যাস