বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক (ফটো ব্লগ- ২)

ভাবুন, আপনি খাঁচায় বন্দী, আর বাঘ-সিংহ-ভাল্লুক-জিরাফ আপনাকে দেখতে আসছে। এমন ধারণার পুরোপুরি না হলেও কাছাকাছি অনুভূতি পাবেন গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে। খাঁচায় বন্দী না হলেও গাড়িতে বসে সাফারী করতে করতে দেখতে পারবেন নানা ধরনের প্রাণী।



পার্কে প্রবেশের প্রধান ফটক এটি। ৩৮১০ একর আয়তনের এ পার্কটি ইন্দোনেশীয় ও থাইল্যান্ডের সাফারী ওয়ার্ল্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বানানো হয়েছে বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষের। পার্কটি পুরোপুরি দেখতে চাইলে কয়েক ধাপে টিকেটের জন্য খরচ করতে হবে মোট ২৯০ টাকা। প্রথমেই প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকার বিনিময়ে পার্কের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবেশ করার অনুমতি মেলে, যেখানে ছোট-খাটো একটা চিড়িয়াখানা দেখা যায়। 



পার্কের প্রদর্শনী ম্যাপ আপনাকে বলে দেবে পার্কটি- কোর সাফারী, সাফারি কিংডম, বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারী পার্ক এবং বঙ্গবন্ধু স্কয়ার- এই পাঁচটি অংশে বিভক্ত। মূল সাফারী পার্ক এলাকা মিনিবাসে ছাড়া ভ্রমণ করা যায় না। বাসে ভ্রমণ মূল্য ১০০ টাকা। 


বাস যাবে আফ্রিকান সাফারীর মধ্য দিয়ে। প্রথমেই মিলবে জিরাফ ও জেব্রার দেখা। ১৫টি আফ্রিকান জিরাফ শুরুতেই আপনাকে স্বাগত জানাবে। আর জেব্রা মহাশয়েরা থাকেন কেবল খাওয়ার তালে। 



এরপর পাবেন হরিণ জোন। ছবির মতো আপনিও সাম্বার হরিণকে এভাবে রাস্তার পাশেই খাবার খেতে দেখবেন। এছাড়াও চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ দেখবেন হয়তো একটু দূরেই।


বাস আরেকটু আগালে দেখা মিলবে ছোটবেলা থেকে শুনে আসা সেই আফ্রিকান কালো ভাল্লুকের। মানুষকে ভয় দেখাতে না পেরে সর্বক্ষণ খাওয়া আর ঘুমিয়েই কাটান তিনি। পরের জোনে রয়েছে বনের রাজা সিংহ। এরপরের জোনও তারই আরেক স্বজাতি সাদা সিংহের দখলে। কিন্তু দর্শনার্থীদের কাছ থেকে অভ্যর্থনা জানানো হয়তো তাদের ধাতে নেই। তাই দূর থেকেই দেখতে হল, ছবি নেয়া গেল না। 


সাফারীর শেষ জোনে আপনাকে স্বাগত জানাবে আমাদের গর্বের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ভাগ্য ভালো থাকলে দেখবেন বাঘ মহাশয়েরা আপনার গাড়ির সামনে দিয়ে বীরদর্পে হেঁটে চলেছেন! মহাশয়েরা বললাম, কারণ বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক তাদের সঙ্গীসহ থাকে। তবে সতর্কতা হলো, এঁরা আপনার গাড়ির কাছে এলে গাড়ির জানালা কখনো খুলবেন না। কারণ, বিপদের হাত-পা নেই জানেনই তো। 


পার্কের মূল আকর্ষণীয় অংশ হল এই সাফারী জোনগুলো। অন্য চারটি অংশ ঘুরে দেখতে এবং বিভিন্ন রাইডে চড়তে আপনাকে আলাদা টিকেট কাটতে হবে। এর বিনিময়ে দেখা যাবে, প্যারট এ্যাভিয়ারী, মেরিন এ্যাকুরিয়াম, ফেন্সী কার্প গ্যালারী, ধনেশ এ্যাভিয়ারী এবং সোয়ান বোটে করে রাজহাঁস। জনপ্রতি ত্রিশ টাকার বিনিময়ে চড়তে পারবেন হাতির পিঠেও। 


যাতায়াত


গাজীপুরের চৌরাস্তা থেকে বাঘের বাজার গেলেই চোখে পড়বে সাফারি পার্কের বিশাল সাইনবোর্ড। ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকলে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাতায়াত করা বাসে সরাসরি বাঘের বাজার নামা যায়। সেখান থেকে পার্ক পর্যন্ত যেতে হিউম্যান হলার ও অটোরিকশা রয়েছে। প্রতি মঙ্গলবার পার্ক বন্ধ থাকে। 

Comments

Popular posts from this blog

গণমাধ্যমের রাজনৈতিক অর্থনীতি কী?

গণমাধ্যমের প্রচারণা মডেল ও ফিল্টার

সামাজিক স্তরবিন্যাস